সোনারগাঁ প্রতিনিধি: সোনারগাঁ উপজেলার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দূর্ণীতির অভিযোগ এনে বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ দিয়েছেন এলাকাবাসীরা। এ বিষয়ে রবিবার দুপুরে উপজেলা শিক্ষা অফিসারের বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, উপজেলা ২৭নং লাধুরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন ব্যাপক দুর্ণীতি ও অনিয়মের সাথে জড়িয়ে পরেছেন। তিনি বিদ্যালয়ে যোগদানের পর প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান না দেওয়ার কারণে বিগত বছরের তুলনায় চলতি বছরে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় ফলাফলের বিপর্যয় ঘটে। তিনি অভিভাবকদের নিকট থেকে ভর্তি এবং সমাপনী পরীক্ষার নম্বর পত্র দেওয়া বাবদ কৌশলে টাকা আদায় করে নেয়। সে অভিভাবকদের কাছ থেকে বিভিন্ন অযুহাতে মোটা অংকের টাকা আদায় করে থাকেন। তার আচার আচারন এলাকার অভিভাবক, শিক্ষার্থী ও সচেতন মহল অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। অভিযোগে আরো উল্লেখ্য করা হয়েছে দুর্ণীতিবাজ, অনিয়মিত ও অর্থলোভী প্রধান শিক্ষক এই বিদ্যালয়ে কর্মরত থাকলে শিক্ষার গুনগত মানসহ শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ মারাত্মক ভাবে বিঘœ সৃষ্টি হবে।
অভিভাবকরা জানায়, প্রধান শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন বিদ্যালয়ে যোগদান করার পর থেকে লেখাপড়া প্রতি নজর না দিয়ে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্ণীতিতে জড়িয়ে পরেছেন। তাই অবিলম্বে আমরা তার অপসারণ দাবী করছি।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আনোয়ার হোসেন বলেন, প্রধান শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন ছেলে মেয়েদের পাঠদান না করে বিভিন্ন সময়ে বিদ্যালয়ের বাইরে অবস্থান করেন। তাই আমরা এর প্রতিবাদ জানালেও তিনি নিজেকে শিক্ষক সমিতির নেতা দাবী করে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্ণীতি চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, বিভিন্ন সময়ে প্রধান শিক্ষক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কাছ থেকে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমি কোন দুর্ণীতি ও অনিয়মের সঙ্গে জড়িত নই। আমার বিরুদ্ধে একটি মহল মিথ্যা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।
সোনারগাঁ উপজেলা শিক্ষা অফিসার আ.ফ.ম জাহিদ ইকবাল বলেন, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করার জন্য সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার কানিজ ফাতেমাকে সভাপতি ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার তাসলিমা আক্তারকে সদস্য এবং শাহনাজ পারভীনকে সদস্য সচিব করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটি রিপোর্ট অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
চৌরাস্তায় ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ, জনসাধারনের স্বস্তি
গতকাল রাত থেকে সোনারগাঁ উপজেলার মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকার গ্রান্ডট্যাঙ্ক রোডটিতে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। ফলে অভাবনীয় যানজট থেকে মুক্ত হয়ে স্বস্তি ফেলেছে স্থানীয় জনসাধারন। তাদের দাবি এভাবে যদি মোগরাপাড়া চৌরাস্তার গ্রান্ডট্যাঙ্ক রোডটি স্থায়ী ভাবে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে তাহলে অসহনীয় যানজট থেকে মুক্তি পাবে এ পথ দিয়ে চলাচলরত যাত্রী সাধারন। রোডটিতে বাস বেধে দিয়ে ভারী যানবাহন বন্ধ করে দেওয়ায় প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
জানাগেছে, সোনারগাঁ উপজেলায় বিভিন্ন মিল ইন্ডাষ্টিজ ও দুটি ইকোনোমি তৈরী হওয়ায় মোগরাপাড়া চৌরাস্তা ও তার আশপাশে বড় বড় ইমারত নির্মান করায় লোক সংখ্যা বাড়তে থাকে। এদিকে মহাসড়ক থেকে সিএনজি, লেগুনাসহ অন্যান্য যানবাহন নিষিদ্ধ করায় মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকায় যাত্রী বাহি গাড়ীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। এছাড়া বৈদ্যেরবাজার হাড়িয়া এলাকা সরকারী খাস জমি ও মেঘনা নদীর কিছু অংশ দখল করে এলাকাবাসীর বাধার মূখে আমান সিমেন্ট নামের একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠে। পরে এলাকাবাসীর বাধা উপেক্ষা করে আমান সিমেন্ট আমান ইকোনোমি জোন তৈরী করে। কিন্তু ইকোনোমি জোনের ভারী যানবাহন চলাচলের মতো রাস্তাঘাট ও অবকাঠামো না থাকার ফলে মোগরাপাড়া চৌরাস্তা দিয়ে তাদের শতাধিক ভারী যানবাহন চলাচল করে। এতে প্রতিদিনই সকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত অসহনীয় যানজট লেগে থাকতো। ফলে গাড়ী তো দুরের কথা সাধারন মানুষের হাটা-চলা দূস্কর হয়ে পড়ে। এ অসহনীয় যানজট থেকে মুক্ত করতে জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। এছাড়া গত বৃহস্পতিবার দুপুরে পুলিশ প্রশাসনের উদ্যোগে ওপেন হাউজ ডে তে এ সড়কের যানজট নিয়ে এমপি মহাদয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেন স্থানীয়রা। সেই ওপেন হাউজ ডে এমপি সাহেব স্থানীয়দের উদ্দেশ্যে বলেন, তিনি উপজেলা তিনটি গুরুত্বপূর্ন সড়ক বাজেট না থাকার পর ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে সংস্কার করে দিয়েছেন কিন্তু আমান ইকোনোমি জোনের ভারী যানবাহন সে রাস্তা নস্ট করে ফেলছে। এসব সড়কে যাতে ভারী যানবাহন চলাচল না করে তার জন্য তিনি আমানকে অবহিত করেছেন। এছাড়া হাসপাতাল গেইট থেকে আনন্দবাজার যেতে সে রাস্তাটা আমানের ভারী যানবাহন চলাচলের ফলে নস্ট হয়ে গেছে। সেই রাস্তা সংস্কার না করে দিলে গত শনিবার থেকে এ রোডে আমানের ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিবেন। এমপি সেই আশ্বাসের পর রবিবার সকাল থেকে গ্রান্ডট্যাঙ্ক রোড়ের মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকা ও চিলারবাগ শহীদ মজনু পার্কের সামনে বাস বেধে ভারী যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। ভারী যানবাহন বন্ধ করায় সকাল থেকে স্বস্তিতে মোগরাপাড়া চৌরাস্তায় যাতায়াত করে জন সাধারন।
গ্রান্ডট্যাঙ্ক রোড দিয়ে চলাচলরত যাত্রীরা জানান, প্রশাসনের উদ্যোগে মোগরাপাড়া চৌরাস্তা ও শহীদ মজনু পার্কের সামনে বাস বেধে ভারী যানবাহন বন্ধ করে দেওয়ায় যানজটমুক্ত রাস্তা তারা পেয়েছে। এজন্য প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান । ###